রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

জন্ডিসের মহৌষধ জিকা গাছ

জন্ডিসের মহৌষধ জিকা গাছ

সংগৃহীত

জিকা দক্ষিণ আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহুবর্ষজীবী বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Lannea coromandelica এবং অন্যান্য স্থানীয় নাম জিকা। এটি Anacardiaceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। অনেকেই হয়ত জানেন না, রাজধানী ঢাকার ‘জিগাতলা’ বা ‘জিকাতলা’ যাই বলেন না কেনো এই গাছের নাম থেকেই এসেছে।

জিকা গাছ সাধারণত ১০ মিটার বা ৩২ ফুট পর্যন্ত বড় হলেও অনুকূল পরিবেশে ২০ মিটার বা ৬৫ ফুট পর্যন্তও বড় হতে দেখা যায়। ছাল ধূসর বর্ণের ও অমসৃণ, পুরনো হলে লম্বালম্বিভাবে কাটা কাটা দাগ হয়। ডিসেম্বর মাসের শেষে পুরাতন পাতা ঝড়ে যায় এবং জানুয়ারি- এপ্রিল পর্যন্ত নতুন পাতা জন্মায়। সাধারণত মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে ছোট ছোট ফুল ফোটে। ফল পাখির খুব প্রিয় খাদ্য।

পাহাড়ি জিকার ফল গোলাকার এবং হলুদাভ সবুজ, অনেকে একে জংলি আমড়াও বলে থাকে। জিকা সহজে মরেনা, এমনকি কেটে ফেলে রাখলেও সামান্য বৃষ্টির পানিতে প্রাণবন্ত হয়ে পাতা গজাতে শুরু করে। জিকা গাছের পাতা বেশ বড় এবং পাতার বোটা লালচে সবুজ। এই গাছের কাঠ ক্ষেতের বেড়া, ক্ষেত্রবিশেষে ঘরের খুঁটি হিসেবে, আর ঢেঁকির পদদ্বয় তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। জিকা গাছের কাঠে কখনো ঘুন ধরে না। শুধু গাছ থেকে নয় ফল থেকেও আঠা পাওয়া যায়।

বিভিন্ন জিনিস জোড়া দিতে এই আঠা ব্যবহৃত হয়। ছোট বাচ্চারা এই আঠা দিয়েই ঘুড়ি তৈরি করে। জিকা গাছের ডাল থেকে সহজেই চারা হয়। এই গাছ বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মায়। জিকা গাছ মূলত ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

জিকা গাছের ভেষজগুণ

১। জন্ডিস হলে জিগা গাছের ছাল ২৫০ গ্রাম আধা লিটার পানিতে ভিজিয়ে সকালে তার সঙ্গে ১২৫ গ্রাম চিনি ও একটি কচি ডাবের পানি মিশিয়ে শরবত তৈরি করে সকালে খালি পেটে খেলে বিলোরুবিন স্বাভাবিক হয়ে আসে।

২। আমাশয় হলে জিকা গাছের ছাল ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে পেট ঠান্ডা থাকে এবং আমাশয় ভাল হয়।

৩। জিকা গাছের ছাল ভিজিয়ে সিদ্ধ করে কুলকুচি করলে ডায়রিয়া ভালো হয়।

৪। প্রতিদিন সকালে জিকা গাছের ছাল পানিতে ভিজিয়ে সকালে সেবন করলে মুখে অরুচি ভাব কেটে যায়।

৫। কুষ্ঠ রোগীর ক্ষততে জিকা গাছের পাতার রসের প্রলেপ দিলে কুষ্ঠ রোগ ভালো হয়। 

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

সর্বশেষ: