বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

যমুনার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ি

যমুনার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ি

চরাঞ্চলের মানুষের নিকট এখন ঘোড়ার গাড়ীর কদর বেড়েছে। তবে বর্ষাকালে এ বাহন অচল, তখন ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে পন্য পরিবহন করতে হয়। বুধবার (৫ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুস্ক মৌসুমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন যমুনা নদীর চরে কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে যে কোন ধরনের মালামাল পরিবহনের একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ী। চরাঞ্চালে খানাখন্দে ভরপুর বালিময় রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রাক যাওয়া অসম্ভব সে সকল রাস্তায় জনপ্রিয় বাহন হিসেব ঘোড়ার গাড়ীর অনেক কদর বেড়েছে।

বেলকুচি উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে বেলকুচি সদর ও বড়ধুল ইউনিয়নের সবটুকুই চর। এসমস্ত চরে সিংহভাগ রবি শস্য উৎপাদন হয়। পাট, আলু, বাদাম, ভূট্টা, গম, ডাল এসব অর্থকরী ফসল পরিবহনের একমাত্র বাহন হিসাবে ঘোড়ার গাড়ী একমাত্র ভরসা।

কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল ঘোড়ার গাড়ীতেই হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন। আর ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে ফসল বিক্রি করতে হয় না। উপজেলার দুই ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষকরা একদিকে যেমন উৎপাদিত ফসল হাট-বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন তেমনি কৃষি উপকরণ সার বীজসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে ঘোড়ার গাড়িতেই নিয়ে যাচ্ছেন। ঘোড়ার গাড়ীর মালিকরাও সুন্দর ভাবে অর্থ উপার্জন করছেন। চরবেল চরের ঘোড়ার গাড়ী চালক বাবলু জানায়, প্রতিদিন গাড়ী দিয়ে গড়ে ৮ থেকে ৯ শত টাকা উপার্জন করা যায়।

ঘোড়ার পিছনে দৈনিক দেড় থেকে দুইশত টাকা ব্যয় করতে হয়। বাকি টাকা দৈনিক রোজগার হয়ে থাকে। বড়ধুল চরের ঘোড়ার গাড়ি চালক বাবলু জানান, শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালানো সম্ভব হয় না। তাই ঘোড়ার গাড়ী দিয়ে উপার্জন করে সংসার চলছে। দৈনিক যে রোজগার হয় তাতে কারও নিকট মুখাপেক্ষী হতে হয় না। ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ ও জামা-কাপড় দিতে এখন তেমন কষ্ট হয় না।

কোলের চরের ঘোড়ার গাড়ি চালক মোহাম্মাদ আলী জানায়, যেখানে ইঞ্জিন চালিত যানবাহন চলে না সেখানে ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে ফসলাদি পরিবহন করছি। এ কারণে চরের মানুষের কাছে ঘোড়ার গাড়ী জনপ্রিয় পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। দু'টি ইউনিয়নে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ টি ঘোড়ার গাড়ী পরিবহনের কাজে ব্যবহার হয়।

বড়ধুল চরবেল চরের কৃষক শহিদুল ইসলাম, সেরাজুল জানায়, ঘোড়ার গাড়ীতে ধান, পাট, গম, ভুট্টা ও শাকসব্জি বহন করে সরাসরি বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি। তাতে ভালো দামও পাচ্ছি। ফড়িয়া ব্যরসায়ী আর আমাদের ঠকাতে পারছেনা। ঘোড়ার গাড়ী এখন চরাঞ্চলের পরিবহনের একমাত্র ভরসা এবং উল্লেখযোগ্য বাহন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ: