সংগৃহীত
১৮ ও ১৯ মার্চ এনডিপি বাগবাড়ি শাখায় দুই দিনব্যাপী কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন বাবলু কুমার সূত্রধর (উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি,সিরাজগঞ্জ), একেএম মহিদুল হক (জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামাবাড়ি,সিরাজগঞ্জ) সহকারী পরিচালক (সিএসপি) সাইফুল ইসলাম, এনডিপি সফল কৃষি উদ্যোক্তা সাদ্দাম হোসেন, পাইকোশা বাজার,কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ এবং সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কর্মকর্তাবৃন্দ।
উপপরিচালক তার বক্তব্যে বলেন ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত এবং দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশের কৃষি হবে প্রধান হাতিয়ার। দিন দিন আমাদের দেশের আবাদি জমি হৃাসের কারণে নিয়মতান্ত্রিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে শুধু রাসায়নিক সারের উপর নির্ভর করা যাবেনা। কারণ অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে কৃষকের ফসল চাষে ব্যয় বেড়ে যায় এবং ফসলের জমিতে পোকামাকড়ের আক্রমন ব্যাপকতা লাভ করে । ট্রাইকো কম্পোস্ট হচ্ছে মাটির প্রাণ, জমির উর্বরতা রক্ষা করতে হলে জৈব সার অর্থাৎ ভার্মি সার এবং ট্রাইকো সার ব্যবহার অবশ্যই করতে হবে।
বাংলাদেশের কৃষকেরা সবজির জমিতে অল্প পরিমাণে জৈব সার ব্যবহার করলেও ধানের জমিতে ট্রাইকো সার একদম ব্যবহার করেনা। যার ফলশ্রুতিতে জমির উর্বরতা ধীরে ধীরে শূণ্যে চলে আসছে। মাটির গঠন অনুসারে ৫ ভাগ জৈব পদার্থ অবশ্যই থাকতে হবে। কিন্ত বাংলাদেশের মাটিতে জৈব সারের পরিমাণ ১-১.৫ ভাগ। এই ইন্ডিকেটর বাংলাদেশের কৃষি জমির জন্য মারাত্বক হুমকিস্বরুপ।
এজন্য গরুর গোবর যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ট্রাইকো সার তৈরি করতে হবে। ট্রাইকো কম্পোস্ট উৎপাদনের জন্য কম্পোস্টের চেম্বারে ট্রাইকোডার্মার গুড়া অথবা তরল ট্রাইকোডার্মা স্প্রে করতে হবে। ধান চাষের জন্য অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে ধান গাছ সাকুলেন্ট হয়ে যায় কিন্ত জৈব সার ব্যবহারের ফলে এর কার্যকারিতা দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকে। তিনি বলেন মাটির প্রাণ জৈব সার তৈরি এবং ব্যবহার বর্তমান এবং আগামী ভবিষ্যতের জন্য প্রধান বিবেচ্য বিষয়।
জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা একেএম মহিদুল হক (জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কামাবাড়ি,সিরাজগঞ্জ) বলেন বাংলাদেশে বিভিন্ন মৌসুমে ধানের বীজের চরম সংকট দেখা যায়। এসময় দেশের বিভিন্ন অসাধু কোম্পানিগুলো নিম্নমানের বীজ সরবরাহ করে। যার কারণে ফসল উৎপাদনে কৃষক মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধান বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করতে হলে অবশ্যই পরিমাণ মতো সার ব্যবহার করতে হবে,লাইন করে চারা লাগাতে হবে,সঠিক পরিপক্ক অবস্থায় ধান হার্ভেস্ট করতে হবে।
একটি জমি থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হলে রোগিং করতে হবে,অবশ্যই জমির আইল থেকে নয় হাত ভিতরের ধান বীজ হিসেবে নিতে হবে। বীজ বিভিন্ন পাত্রে সংরক্ষণের পদ্ধতি নিয়ে আলেচনা করেন। সহকারী পরিচালক জনাব সাইফুল ইসলাম প্রশিক্ষণে আমন্ত্রিত প্রশিক্ষকদের পরামর্শ যথাযথ মেনে চলার জন্য কৃষকদের নির্দেশ দেন। সফল কৃষক সাদ্দাম হোসেন মাশরুম উৎপাদনে তার সফলতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন একজন আধুনিক কৃষি উদ্যোক্তা হতে হলে নতুন নতুন কৃষি পণ্য নিয়ে কাজ করতে হবে।
প্রশিক্ষণের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন মুহাম্মদ আবদুল হালিম, ব্যবস্থাপক (সমন্বিত কৃষি ইউনিট),এনডিপি। প্রশিক্ষণে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কৃষি খাতের কার্যক্রম সচিত্র প্রতিবেদন দেখানো হয়।